পানিতে ভালো থাকে যেসব ইনডোর প্লান্ট

মানি প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্ট, লাকি ব্যাম্বু গাছগুলো পানিতে কম পরিচর্যায় ভালো থাকে। এই গাছগুলো ঘরের বাতাস কে বিশুদ্ধ রাখে।

পানিতে ভালো থাকে যেসব ইনডোর প্লান্ট

লম্বা ছুটিতে বাসার বাহিরে গেলে সবার মনের মধ্যে ঘরে থাকা ইনডোর প্লান্ট নিয়ে একটি দুশ্চিন্তা থেকে যায়। কারণ, ইনডোর প্লান্টে নিয়মিত পানি দিতে হয়। তবে কিছু কিছু গাছের প্রজাতি আছে যেগুলো শুধু পানিতেই ভালো থাকে বছরের পর বছর। পানিতে ইনডোর প্লান্টের পরিচর্যা খুব বেশি করতে হয় না। শুধু পানি পরিবর্তন করেই ভালো রাখা যায় এসব গাছ। 

গাছ সাধারণত মাটিতেই হয়। তবে কিছু গাছ রয়েছে যেগুলো শুধু পানিতেই ভালো থাকে দীর্ঘদিন। এসব গাছ ৭ দিন অথবা ১০ দিনে একবার পানি পরিষ্কার করলে হয়। আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছে যাদের গাছ খুব পছন্দ কিন্তু পরিচর্যা করার সময় থাকে না তাদের জন্য এসব গাছ।

স্পাইডার প্লান্ট

স্পাইডার প্লান্ট বেড়ে উঠার জন্য শুধু পানিই যথেষ্ট। খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয় না এই গাছের। এই উদ্ভিদ বেড়ে উঠার জন্য সরাসরি সূর্যের আলো প্রয়োজন পড়ে না। আলো বাতাস চলাচল করে এসব জায়গায় রাখতে হয় স্পাইডার প্লান্ট। চিকন পাতার এই গাছ ঘরে থাকলে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ। টেবিলের উপর অথবা ঘরের এক কর্নারে স্পাইডার প্লান্ট সাজিয়ে রাখলে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ে। চিকন পাতার এই গাছ ঘরকে করে দূষণ মুক্ত।

আরও পড়তে পারেন:

মানি প্লান্ট গাছের উপকারিতা ও যত্ন

বাড়ির অবহেলিত খালি জায়গাগুলো সাজিয়ে তুলবেন যেভাবে

লাকি ব্যাম্বু

বাঁশ গাছ যাদের পছন্দ তাদের জন্য ইনডোর প্লান্ট হিসেবে লাকি ব্যাম্বু বেস্ট। কাঁচের বয়ামে রাখা একসাথে একগুচ্ছ সবুজ বাঁশ গাছ সবার নজর কেড়ে নিবে। লোকমুখে প্রচলিত আছে ” লাকি ব্যাম্বু মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেয়। খুব বেশি যত্ন নিতে হয় না এই গাছের৷ নিয়মিত পানি পরিবর্তন করতে হয় লাকি ব্যাম্বু গাছের। ৭ থেকে ১০ দিনে একবার পানি পরিবর্তন করলেই লাকি ব্যাম্বু গাছ ভালো থাকে। শুধু পানিতেই বেড়ে উঠতে পারে এই গাছ।

স্নেক প্লান্ট

ঘরের ভিতরে থাকা টক্সিন চুষে নিয়ে বাতাস কে দূষণমুক্ত করে স্নেক প্লান্ট। ঘরের শোভা বাড়াতে এই গাছের জুড়ি মেলা ভার। স্নেক প্লান্ট ঘরে রাখলে সবুজের ছোঁয়ায় ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। বেডরুম সাজসজ্জার জন্য চমৎকার এবং সবার পছন্দের একটি গাছ। কারণ, এটি স্বাস্থ্যকর বায়ুপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয় না এই গাছের। শুধু পানিতেই বেঁচে থাকে স্নেক প্লান্ট। নিয়মিত পানি পরিষ্কার করে দিলেই ভালো থাকে এই গাছ।

মানি প্লান্ট

মানি প্লান্ট একটি জনপ্রিয় ইনডোর প্লান্ট। পানি এবং মাটি উভয় জায়গায় স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে মানি প্লান্ট। একে আমরা পোথাস নামেও জানি। বারান্দা অথবা জানালার পাশে লতানো এই গাছের ঝুলে থাকা পাতাগুলো ঘরের শোভা বাড়ায়। সরাসরি সূর্যের আলোতে এই গাছ রাখবেন না। এতে পাতা ঝলসে যেতে পারে। যদি কোন কারণে পাতা হলুদ হয়ে যায় তাহলে হলুদ অংশটুকু চিড়ে ফেলুন।

আরও পড়তে পারেন:

ইনডোর প্ল্যান্টের অসাধারন কিছু উপকারিতা

অ্যারোহেড প্লান্ট

ঘরের বাতাস কে দূষণমুক্ত রাখার জন্য রাখতে অ্যারোহেড প্লান্ট কার্যকরী। উজ্জ্বল সাদাটে সবুজ রঙের পাতা দেখলে প্রথমে কচু পাতার কথা মনে পড়বে। এটি ঘরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ঘরের তাপমাত্রা কমিয়ে ঘরকে রাখে শীতল। শুধু পানিতেই বেড়ে উঠে এই গাছ। নিয়মিত ১০ দিন অথবা ১৫ দিনে পরে পানি পরিবর্তন করে দিলে হয়। অ্যারোহেড গাছের শিকড় বড় হওয়ায় একটি বড় পাত্রে এই গাছ রাখা ভালো।

পানিতে ইনডোর প্লান্টের পরিচর্যা কীভাবে করবেন

পানিতে ইনডোর প্লান্টের বেশি পরিচর্যা করতে হয় না, তবে গাছ সুস্থ এবং সঠিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

  • নিয়মিত পানি পরিষ্কার করতে হবে। ৭-১০ দিনের মধ্যে পানি পরিষ্কার করে করতে হবে।
  • সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা গাছের জন্য ক্ষতিকর।
  • পর্যাপ্ত আলো এবং বাতাস থাকতে হব, তবে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে। অন্ধকার ঘরে ইনডোর প্লান্ট ভালোভাবে জন্মাতে পারে না।
  • পরিষ্কার পানি ব্যবহার করতে হবে। ক্লোরিন যুক্ত পানি ব্যবহার না করে ফিলটার করা পানি ব্যবহার করুন।
  • বড় পাত্র নির্বাচন করতে হবে, যাতে গাছের শেকড় সঠিক ভাবে ছড়িয়ে যেতে পারে। কাঁচের পাত্র ব্যবহার করা ভালো। পানির পাত্র মাঝে মধ্যে পরিষ্কার করে দিতে হবে এবং গাছের অতিরিক্ত শেকড় ছাঁটাই করে দিতে হবে।

শেষকথা

ইনডোর প্লান্টের অনেক উপকারিতা রয়েছে। ঘরের বাতাস কে পরিশোধন করে ঘর কে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এসব উদ্ভিদ। বাতাসে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ কে শোষণ করে, বাতাস কে রাখে বিশুদ্ধ। ঘরের বারান্দায় অথবা বেডরুম, যেকোনো স্থানে একটি টবে গাছটি ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এতে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে দ্বিগুণ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *