লাকি ব্যাম্বু গাছের পরিচর্যা

ঘর সাজাতে আমরা বিভিন্ন ইনডোর প্লান্ট ব্যবহার করে থাকি। এগুলো আমাদের ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘরের বাতাস কে বিশুদ্ধ রাখে। লাকি ব্যাম্বু গাছের যত্ন খুব বেশি করতে হয় না। অল্প যত্নে খুব সহজে বেড়ে উঠে এই গাছ।

Lucky Bamboo অর্থ হচ্ছে সৌভাগ্যবান বাঁশ। বাস্তুতন্ত্র অনুযায়ী এই গাছ সৌভাগ্য নিয়ে আসে। সৌন্দর্য বর্ধন এই গাছ ঘরের বাতাসে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ চুষে নিয়ে ঘরের বাতাস কে রাখে শীতল এবং সতেজ। বাড়ির ড্রয়িং রুম, বেডরুম অথবা বারান্দার যে কোনো স্থানে রাখতে পারেন এই গাছ। লাকি ব্যাম্বু গাছের যত্ন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো-

লাকি ব্যাম্বু গাছের যত্ন

আলো এবং বাতাস

লাকি ব্যাম্বু গাছের জন্য সরাসরি সূর্যের আলো প্রয়োজন নাই। সরাসরি সূর্যের আলো গাছের জন্য ক্ষতিকর। সরাসরি সূর্যের আলো গাছের পাতা জ্বালিয়ে দিতে পারে। তাই লাকি ব্যাম্বু গাছ সূর্যের আলোতে না রেখে আলো বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রাখা উচিত।

নিয়মিত পানি দেওয়া

লাকি ব্যাম্বু গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে। তবে লক্ষ রাখতে হবে পানিতে লবণ এবং আয়রনের মাত্রা কতটুকু। পানিতে লবণ এবং আয়রনের মাত্রা পরিমাপের চেয়ে বেশি হলে গাছের পাতা শুকিয়ে হলদেটে হয়ে যেতে পারে।

লাকি ব্যাম্বু পানি এবং মাটি দুই জায়গায়ই জন্মায়। লাকি ব্যাম্বু গাছে দুই সপ্তাহে ১ বার অর্থাৎ ১৫ দিনে ১ বার পানি পরিবর্তন বা পরিষ্কার করা উচিত। নাহলে গাছ এবং গাছের শেকড়ে ছত্রাক আক্রমণ করতে পারে।

মাটি

পানির পাশাপাশি মাটিতেও লাকি ব্যাম্বু রোপণ করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। মাটি শুকিয়ে গেলে তখন পানি দিতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে আর্দ্রতা যেন বেশি না হয়।

তাপমাত্রা

কম তাপমাত্রা এবং অধিক তাপমাত্রা কোনোটাই লাকি ব্যাম্বুর জন্য সঠিক নয়। দু’টোই এই গাছের জন্য ক্ষতিকর। এই লাকি ব্যাম্বু গাছটি ১৫-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভালো থাকে। একটি কথা সবসময় মনে রাখতে হবে, কম তাপমাত্রা এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা এই গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করে।

আরও পড়তে পারেন: পিস লিলি গাছের পরিচর্যা

রোগ প্রতিরোধ করা

লাকি ব্যাম্বুর পাতায় হলদেটে ভাব আসতে পারে। এটি আয়রন যুক্ত পানি থেকে হতে পারে। লাকি ব্যাম্বু গাছের ক্ষেত্রে আয়রন যুক্ত পানি এড়িয়ে যেতে হবে। এটি গাছের পাতায় হলদেটে ভাব নিয়ে আসে। পাতার হলদেটে ভাব দূর করতে পানি পরিষ্কার করতে হবে।

কীটপতঙ্গ প্রতিরোধ করা

পোকামাকড় এবং কীটপতঙ্গ যেকোনো গাছের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো গাছের শক্তি রোধ করে। ডিটারজেন্ট অথবা সাবান পানি দিয়ে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। হালকা কীটনাশক যুক্ত স্প্রেও ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঘরের ভিতরে হওয়ায় অতিরিক্ত কীটনাশক যুক্ত স্প্রে ব্যবহার করা উচিত না।

পাতা ছাঁটাই করা

গাছের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে পাতা। অনেক সময় লাকি ব্যাম্বো গাছের পাতায় হলদেটে ভাব চলে আসে। এটি গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করে। তাই গাছের যে সকল পাতা হলুদ হবে এবং কীটপতঙ্গে আক্রান্ত হবে সেসব পাতা দ্রুত ছাঁটাই করে ফেলতে হবে।

লাকি ব্যাম্বু গাছের দাম

ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাকি ব্যাম্বুর জুড়ি মেলা ভার। এটি সাধারণত মাটি এবং পানি উভয় স্থানে জন্মায়। খুব কম পরিচর্যায় ভালো থাকে এই লাকি ব্যাম্বু গাছ। তবে ১৫-২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় স্বাভাবিক বৃদ্ধি পায় এই গাছ।

লাকি ব্যাম্বু ইনডোর প্লান্টের মধ্যে জনপ্রিয় একটি গাছ হওয়ায় এটি সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন নার্সারি এবং কিছু অনলাইন পেইজ থেকে ক্রয় করতে পারবেন। বিভিন্ন দামে নিতে পারবেন এই গাছ। তবে দাম নির্ভর করবে গাছের সাইজ এবং গাছের পরিপক্বতার উপর নির্ভর করে। লাকি ব্যাম্বু গাছ ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

লাকি ব্যাম্বু গাছের বৈশিষ্ট্য

লাকি ব্যাম্বু গাছের পাতা সবুজ এবং চকচকে হয়ে থাকে।
লাকি ব্যাম্বু গাছ মাটি এবং পানি উভয় জায়গায় জন্মায়।
এই গাছ কম আলোতে ভালো থাকে।
খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয় না লাকি ব্যাম্বু গাছে।
এই গাছ ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘরের বাতাস কে বিশুদ্ধ এবং শীতল রাখে।

উপসংহার

লাকি ব্যাম্বু গাছ অসাধারণ একটি গাছ। ঘরের মধ্যে সবুজের ছোঁয়া পেতে চাইলে অন্যান্য ইনডোর প্লান্টের সাথে একটি লাকি ব্যাম্বু গাছ রাখতে পারেন। এটি আপনার ঘরে প্রশান্তির ছোঁয়া দিবে তার পাশাপাশি ঘরকে করবে প্রাণবন্ত।