স্পাইডার প্লান্টের পরিচর্যা

ঘরের শোভা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাতাস বিশুদ্ধ করার জন্য স্পাইডার প্লান্ট এর রয়েছে বিশেষ গুন। এটি NASA গবেষণা থেকে প্রমাণিত যে বাতাসে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন চুষে নিয়ে ঘরের বাতাসকে রাখে সতেজ। স্পাইডার প্লান্টের পরিচর্যা অথবা যত্ন খুবই সহজ। এই গাছের রয়েছে বিশেষ যত্ন।  নিয়মিত পানি দেওয়া, পাতা ছাঁটাই করা এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাস থাকলে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে এই স্পাইডার প্লান্ট। স্পাইডার প্লান্টের সঠিক যত্ন নিতে পারলে অনেকদিন বেঁচে থাকে এই গাছ। 

স্পাইডার প্লান্টের রয়েছে বিশেষ উপকারিতা। এই গাছ বায়ু পরিশোধন করার পাশাপাশি শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে। স্পাইডার প্লান্ট ঘরে থাকা পোষা প্রাণীদের জন্য নিরাপদ। এটি ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যেকোনো ইনডোর প্লান্টের তুলনায় এই গাছ অনেক সহজলভ্য। 

স্পাইডার প্লান্ট

জনপ্রিয় একটি গাছ হচ্ছে স্পাইডার প্লান্ট। Chlorophytum comosum বা স্পাইডার প্লান্টের উৎপত্তি দক্ষিণ আফ্রিকায়। এটি ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করে৷ সাধারণত এই গাছের পাতার রং সবুজ হয়ে থাকে। এই গাছ ১০ ইঞ্চি থেকে ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

স্পাইডার প্লান্টের যত্ন

পর্যাপ্ত আলো বাতাস, নিয়মিত পানি দেওয়া, সঠিক আর্দ্রতায় দীর্ঘদিন ভালো থাকে স্পাইডার প্লান্ট। এই গাছের বিশেষ কিছু যত্ন সম্পর্কে জেনে নিন। 

পর্যাপ্ত আলো এবং বাতাস

স্পাইডার প্লান্টের জন্য পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রয়োজন। তবে পরোক্ষ আলো এই গাছের জন্য বেশি প্রয়োজন। এই উদ্ভিদ সরাসরি সূর্যের আলোতে রাখা যাবে না। অতিরিক্ত সূর্যের আলোয় স্পাইডার প্লান্টের পাতায় দাগ পড়তে পারে। ঘরের বারান্দা অথবা জানালার পাশে যে সকল স্থানে আলো এবং বাতাস চলাচল করে সেখানে এই গাছ রাখতে পারেন। 

নিয়মিত পানি দেওয়া

যেকোনো গাছের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে স্পাইডার প্লান্ট অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিতে হবে। গরমকালে ৭ থেকে ১০ দিনে দুইবার পানি দিতে হবে। শীতকালে মাটির আর্দ্রতার উপর নির্ভর করে পানি দিতে হবে। অতিরিক্ত পানি দিলে স্পাইডার প্লান্টের শেকড় পচে যেতে পারে।

আরও পড়তে পারেন: লাকি ব্যাম্বু গাছের পরিচর্যা

মাটি তৈরি করা

মাটি নির্বাচন করা বা মাটি তৈরি করা স্পাইডার প্লান্টের জন্য জরুরি। ভালো ড্রেনেজ যুক্ত দোআঁশ মাটি এই গাছের জন্য উপকারী। মাটি এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেন জলাবদ্ধতা তৈরি না হয় এবং ভালোভাবে পানি নিষ্কাশিত হয়।

আর্দ্রতা 

অতিরিক্ত আর্দ্রতা এবং কম আর্দ্রতা এই গাছের জন্য ক্ষতিকর। মাঝারি আর্দ্রতা স্পাইডার প্লান্টের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গরমকালে পাতায় নিয়মিত পানি ছিটাতে হবে। আর্দ্রতার পাশাপাশি তাপমাত্রার দিকে নজর রাখতে হবে। স্পাইডার প্লান্টের জন্য ১৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপযুক্ত। 

সার প্রয়োগ

জৈব সার স্পাইডার প্লান্টের জন্য অন্য সার থেকে ভালো। মার্চ থেকে মে মাসে স্পাইডার প্লান্টে সার দেওয়ার উপযুক্ত সময়। অতিরিক্ত সার দেওয়া এই গাছের শিকড়ের জন্য ক্ষতিকর। তরল সার মাসে থেকে সর্বোচ্চ দুইবার দিতে পারেন। শীতকালে সার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। 

পাতা ছাঁটাই করা 

পর্যাপ্ত আলো না থাকা এবং অতিরিক্ত পানির কারণে স্পাইডার প্লান্টের পাতা হলুদ বা শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুকিয়ে যাওয়া পাতার অংশটুকু কেটে নিতে হবে। তাহলে নতুন পাতা বের হবে।

স্পাইডার প্লান্টের দাম

স্পাইডার প্লান্টের আকারের উপর দাম নির্ভর করে। ছোট এবং বড় গাছের দামের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। 

ছোট স্পাইডার প্লান্ট ১০০৳ থেকে ৩০০৳ মধ্যে পাওয়া যায় আর বড় স্পাইডার প্লান্ট ৫০০৳ থেকে ৮০০৳ মধ্যে পাওয়া যাবে। তবে স্থান এবং গাছের টব বা পটের উপর নির্ভর করে এক জায়গায় একেক দাম হতে পারে।

শেষকথা

স্পাইডার প্লান্ট ঘরে তাজা বাতাস সরবরাহ করে। এই গাছ ঘরের শোভা বাড়ানোর কাজ করে এবং ঘরের বাতাস পরিশোধন করে। সবুজ পাতার এই গাছ খুবই কম মূল্যে দেশের যেকোনো স্থানে পেয়ে যাবেন।