রান্নাঘরের সরঞ্জামের তালিকা
বর্তমানে রান্নাঘরে অনেক বিশেষ উপাদান থাকে। ছোট ছোট এই উপাদানগুলো ছাড়া রান্নাঘর মোটামুটি অসম্পূর্ণ। এসব খুঁটিনাটি জিনিসপত্রের রয়েছে বিশেষ ব্যবহার।

রান্নার প্রয়োজনে রান্নাঘরে বিভিন্ন সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। যেগুলো ছাড়া মূলত রান্নাঘর অকেজো। রান্নাঘরের এই জিনিসগুলো অধিকাংশ ক্রোকারিজ দোকানে পাওয়া যায়। রান্নাঘরের টুকিটাকি জিনিস রান্নাঘর কে পরিপূর্ণ করে এবং রান্নাঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। রান্নাঘরের এই উপকরণ সমূহ আমাদের সবার রান্নাঘরে থাকে। নতুন দম্পতির সংসারে এই সকল জিনিসপত্র নিখুঁত ভাবে সংগ্রহ করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
রান্নাঘরে হাঁড়ি পাতিল থেকে শুরু করে ময়লা আবর্জনা রাখার ডাস্টবিন পর্যন্ত অনেক জিনিসপত্রের প্রয়োজন হয়। এসব উপাদানগুলো আমাদের প্রতিদিনের রান্না কাজে ব্যবহার হয়। রান্নাঘরের টুকিটাকি জিনিস নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো-
রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র
একটি রান্নাঘরে অনেক জিনিসপত্র থাকতে হয়। যা রান্নার কাজে সহায়তা করে এবং তা ছাড়া মোটামুটি রান্নাঘর অসম্পূর্ণ থাকে। নিচে এমন সব জিনিসের তালিকা করা হলো-
রান্নার পাত্র
রান্নার জন্য অনেক ধরনের পাত্র রয়েছে। রান্না করা, ভাজি করা এবং অনন্য উপাদানের জন্য অনন্য পাত্র ব্যবহার হয়। যেমন-
হাঁড়ি পাতিল:- রান্নাঘরের অন্যতম বিশেষ উপাদান হচ্ছে হাড়ি পাতিল। এইসব পাত্রের মধ্যে খাবার জিনিস রান্না করা হয়। রান্নার মূল পাত্র হচ্ছে এই হাঁড়ি পাতিল। ভাত, তরকারি, নুডলস, মাছ এবং মাংস রান্না করতে দরকার হয়। এসব পাতিলের রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার।রান্নার পাশাপাশি খাবার সংরক্ষণে ব্যবহার করা হয়।
কড়াই:- ছোট বড় সব ধরনের কড়াই পাওয়া যায়। কড়াইতে আলু, ডিমসহ অন্যান্য খাবার ভাজি করা হয়। এটি খোলামেলা এবং প্রশস্ত হওয়ায় এখানে উল্টানো সহজ হয়। একাধিক কাজে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি এগুলো টেকসই এবং স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে।
রাইস কুকার:- রাইস কুকারে খুব সহজে ভাত রান্না করা যায়৷ এটি সময় বাঁচায় এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। আধুনিক রান্নাঘরের অন্যতম অংশ হচ্ছে রাইস কুকার। রাইস কুকারে ভাতের পাশাপাশি খিচুড়ি, পোলাও রান্না করা যায়। বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে বলে ছোট বড় সব পরিবারের জন্য কার্যকরী।
প্রেসার কুকার:- যে-সব জিনিস সেদ্ধ করতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় সেগুলো প্রেসার কুকারে দ্রুত সেদ্ধ হয়। মাংস, আলুসহ অন্যান্য জিনিস স্বল্প সময়ে সেদ্ধ হয়ে যায়। এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব। প্রেসার কুকারে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। দ্রুত রান্না হওয়ায় কষ্ট কম হয়।
তাওয়া:- কোনো কিছু হালকা সেঁকে নেওয়ার জন্য তাওয়া ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশেষ করে রুটি অথবা পরোটা বানাতে এটি ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি পাতলা হওয়ায় স্থানান্তর এবং পরিষ্কার করা সহজ। এটি রান্নাঘরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।

পরিবেশনের সরঞ্জাম
রান্নাঘরে বেসিক কিছু বাসনপত্র থাকে। প্লেট, বাটি, জগ, মগ এবং গ্লাস সহ আরো অনেক পাত্রের প্রয়োজন হয়। নিচে সেগুলো সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো-
প্লেট:- খাবার পরিবেশনের জন্য প্লেট গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে খাবার সুন্দর ভাবে পরিবেশন করা যায়। প্লেটে খাবার পরিবেশন করলে ডাইনিং রুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। সিরামিক, কাঁচ, স্টিলসহ আরো বিভিন্ন উপাদান এবং বিভিন্ন ডিজাইনের প্লেট পাওয়া যায়।
বাটি:- খাবার পরিবেশন করার সময় তরকারি বিভিন্ন বাটিতে পরিবেশন করে দেওয়া হয়। খাবারের ভালো অভিজ্ঞতা পাওয়ায় জন্য বাটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। বাটি বিভিন্ন সাইজের এবং বিভিন্ন ডিজাইনের হয়ে থাকে।
চামচ:- খাবার সবার প্লেট বা পাত্রে পরিবেশন করতে চামচ এর প্রয়োজন হয়। বর্তমানে অনেক মডুলার চামচ পাওয়া যায়। যার মধ্যে রাজকীয় লুক থাকে। এগুলো খাবারের রুচি বৃদ্ধি করে।
জগ, মগ এবং গ্লাস:- পানি খাওয়ার জন্য জগ, মগ এবং গ্লাসের দরকার হয়। এগুলো ছাড়া রান্নাঘর পরিপূর্ণ হয় না। সবার রান্নাঘরে এই জিনিসগুলো থাকেই।
কাপ:- চা পান করার কাপ রান্নাঘরের অপরিহার্য উপাদান। পরিবারের সদস্য এবং অতিথি আপ্যায়নের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়৷

রান্নাঘর পরিষ্কার করার সরঞ্জাম
সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে রান্নাঘর। বিভিন্ন কারণে ময়লা হতে পারে রান্নাঘর। যা থেকে হতে পারে মারাত্মক রোগব্যাধি। তাই যথাসাধ্য রান্নাঘর পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন।
ঝাড়ু:- ধুলাবালি এবং রান্নাঘরের সাধারণ ময়লা আবর্জনা দূর করতে রান্নাঘরে নিয়মিত ঝাড়ু দিন। নিয়মিত ঝাড়ু দিলে দুর্গন্ধ চলে যাবে এবং পোকামাকড় এর উপদ্রব থেকে বাঁচতে পারা যাবে। নিয়মিত পরিষ্কার করলে তেলাপোকা, মাছি এবং পিঁপড়া রান্নাঘর থেকে চলে দূর হবে।
ডাস্টবিন:- রান্নাঘরে প্রতিদিন খাবার তৈরি হয় বলে সেখানে ময়লা আবর্জনা হওয়া স্বাভাবিক। এই ময়লাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে না রাখলো তা থেকে দুর্গন্ধ এবং বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ছড়াতে পারে। তার জন্য রান্নাঘরে ডাস্টবিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জীবাণু নাশক সাবান বা লিকুইড:- জীবাণু দূর করার জন্য অনেক কিছু ব্যবহার করতে পারেন। সাবান, ডিটারজেন্ট অথবা লিকুইড সাবান ইত্যাদি যে কোনো একটি ব্যবহার করে রান্নাঘরকে রাখুন চকচকে।
স্পঞ্জ:- খাবার খাওয়ার পর প্লেট, হাঁড়িপাতিল এবং থালাবাসন ধোয়ার জন্য স্পঞ্জ ব্যবহার হয়। ভিম সাবান অথবা লেবু যুক্ত যেকোনো সাবান স্পঞ্জের সাথে লাগিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

কাটিং সরঞ্জাম
মাছ, মাংস, সবজি এবং ফল কাটার জন্য রান্নাঘরে কাটিং সরঞ্জাম থাকা জরুরি। এগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
বঁটি:- মাছ, মাংস এবং সবজি কাটার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বঁটি। বঁটি ছাড়া রান্নাঘর অসম্পূর্ণ। আমাদের রান্নাঘরের একটি ঐতিহ্য হচ্ছে এই বঁটি। বঁটি দিয়ে মাছ মাংসের ইচ্ছে অনুযায়ী টুকরো করা যায়৷
চুরি:- হালকা জিনিসপত্র কাটার জন্য রান্নাঘরে চুরি প্রয়োজন। চুরি বিশেষ করে ফল কাটতে বেশি ব্যবহার হয়। চুরি দিয়ে হালকা সবজিসহ অনন্য কাজ করা যায়।
আরও পড়তে পারেন: ঘর সাজানোর টুকিটাকি জিনিসপত্রের তালিকা
অনন্য সরঞ্জাম
- খুন্তি
- ঝুড়ি
- কনটেইনার
- ফ্রিজ
- ওভেন
- র্যাক
- শেলফ
- ট্রে
- কেটলি
- ব্লেন্ডার
- কাটা চামচ
- স্লাইসার
- চপিং বোর্ড
শেষকথা
মডুলার কিচেনে অনেক জিনিস থাকে। যেগুলো ছাড়া রান্নাঘর মোটামুটি অকার্যকর। রান্নাঘরের টুকিটাকি জিনিস রান্নাঘরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাঁড়ি পাতিল থেকে শুরু করে রান্নাঘর পরিষ্কার করার উপাদান পর্যন্ত সবই রান্নাঘরের জন্য প্রয়োজনীয়।