রান্নাঘর ঠান্ডা রাখার ৮ ঘরোয়া উপায়

গ্রীষ্মকালে রান্নাঘরে প্রচণ্ড গরম থাকে, তখন রান্নাঘরে রান্না করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কিছু কৌশল অবলম্বন করে রান্নাঘরকে ঠান্ডা রাখা যায়।

রান্নাঘর ঠান্ডা রাখার ৮ ঘরোয়া উপায়

আমাদের বাড়িতে সব থেকে উষ্ণ স্থান হচ্ছে রান্নাঘর। রান্নাঘরে বেশিরভাগ সময় আগুন জ্বালাতে হয়, যার কারণে ওই ঘরটি সব থেকে বেশি উষ্ণ থাকে। এই উষ্ণ ঘরকে বেশ কিছু উপায়ে ঠান্ডা রাখা যায়। যে দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হয় ওই দিকে একটি জানালা রাখা উচিত। তাহলে রান্নাঘরে বাতাস ঢুকে রান্নাঘর ঠান্ডা রাখা যেতে পারে। এছাড়াও রান্নাঘর ঠান্ডা রাখার উপায় হিসেবে, ছোট ছোট গাছ রোপণ এবং পাখা ব্যবহার করতে পারেন ।

বাংলাদেশে সাধারণত ৩ থেকে ৪ মাস অনেক বেশি গরম পড়ে। মার্চ, এপ্রিল, মে, জুন এই ৪ মাসে বাংলাদেশের গরম পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে বেশি। এই তীব্র গরমে বাইরে যাওয়া তো দূরের কথা আমাদের ঘরের মধ্যে থাকাই কষ্টকর হয়ে উঠে। দিন দিন গরমের ধরন বদলে যাচ্ছে। যে-সব বাড়িতে আগে ফ্যানের বাতাস দিয়ে দিন চলে যেত সেসব বাড়িতে এখন প্রচণ্ড দাবদাহে থাকায় কষ্টকর হয়ে উঠেছে।

আমরা চেষ্টা করলে রান্নাঘরের উষ্ণতা থেকে বাঁচতে পারি। রান্নাঘর গরম হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আজকের ব্লগে রান্নাঘর কেন গরম হয় এবং রান্নাঘর ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।

ঘর অন্ধকার রাখুন

ঘরের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় লাইট বন্ধ করে রাখুন। খুব প্রয়োজন না হলে অতিরিক্ত লাইট জ্বালানো থেকে বিরত থাকুন। আলোর পরিমাণ যত কম হবে ঘর তত ঠান্ডা থাকবে। টিউবলাইট এর পরিবর্তে এলইডি লাইট এবং টেবিল ল্যাম্প ব্যবহার করুন এতে, ঘর ঠান্ডা থাকবে।

মোটা সুতি পর্দা ব্যবহার করুন

রান্নাঘরে জানালার উপর দিয়ে একটু মোটা ধরনের সুতি পর্দা ব্যবহার করুন। এতে করে সূর্যের আলো এবং রোদের তীব্রতা ঘরের মধ্যে একটু কম প্রবেশ করবে। যাতে করে রান্নাঘর ঠান্ডা থাকবে।

ঘরের মধ্যে ছোট ছোট গাছ লাগান

গাছ ঘরের মধ্যে যে-রকম সৌন্দর্য বাড়ায় তেমনি ভাবে ঘরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গাছ ঘরের মধ্যে থাকা কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে ঘরকে ঠান্ডা রাখে। আবার ঘরের চারপাশে গাছ লাগালে গাছগুলো বড় হয়ে ঘরের উপর ছায়া দিবে।

আরও পড়তে পারেন:

রান্নাঘর থেকে তেলাপোকা তাড়ানোর উপায়

ঘরের আসবাবপত্র কীভাবে ভালো রাখবেন

দেওয়ালে হালকা রং ব্যবহার করুন

ঘর তৈরি করার পরে ঘরের দেওয়ালে যে রং ব্যবহার করা হয় তা যদি একটু হালকা রং হয় তাহলে সেই রং ঘরকে ঠান্ডা রাখে। কারণ রং যত গাঢ় হবে আলো ততবেশি শোষিত হবে এবং রং যত হালকা হবে আলো অত বেশি প্রতিফলিত হয়। আলো যত বেশি শোষিত হবে তাপমাত্রা এত বেশি বৃদ্ধি হবে। তাই ঘরে হালকা রঙের ব্যবহার করেন।

সকাল বেলা পর্দা টেনে দিন

সকালে সূর্য উঠার আগে জানালার পর্দা লাগিয়ে দিন। কারণ সূর্যের আলো যত বেশি ঘরের ভিতরে পড়বে ঘর তত বেশি গরম হবে। এজন্য সূর্য উঠার আগে জানালার উপর একটা মোটা পর্দা লাগিয়ে দিন। মোটা পর্দা সূর্যের আলো ঘরে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করে।

প্রেসার কুকার ব্যবহার

রান্নাঘরে রান্নার ফলে প্রচণ্ড ধোঁয়া বের হয়। রান্নাঘর গরম থাকার অন্যতম কারণই হচ্ছে এই ধোঁয়া। তাই পেশার কুকার ব্যবহার করলে মোটামুটি ধোঁয়া এড়ানো যায়। যার ফলে রান্নাঘর ঠান্ডা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও প্রেসার কুকার ব্যবহার করেও ধোঁয়া পুরোপুরিভাবে এড়ানো সম্ভব না।

জানালা খোলা রাখা

ঘর তৈরি করার সময় যে দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হয় ওই দিকে মুখ করে জানালা রাখুন। এতে করে জানালা দিয়ে ঘরের মধ্যে বাতাস চলাচল করবে। আর জানালা দিয়ে বাতাস ঢুকলে ঘর ঠান্ডা থাকবে।

আরও পড়তে পারেন:

রান্নাঘরের দুর্গন্ধ দূর করার ১০ ঘরোয়া উপায়

বরফ-পাখা

বর্তমানে কমবেশি আমরা সবাই টেবিল পাখা ব্যবহার করি। টেবিল পাখা ব্যবহার করার সময় আমরা যদি পাখার সামনে এক পাতিল বরফ রেখে দেই তাহলে দেখবেন কিছুক্ষণ পরে ঘর ঠান্ডা হয়ে গেছে।

পরামর্শ

  • রান্নাঘরে Exhaust Fan ব্যবহার করুন।
  • রাতে সবজি কেটে নিন এবং মশলাপাতি তৈরি করে নিন, তাহলে রান্নাঘরে বেশিক্ষণ থাকা লাগবেনা।
  • সিদ্ধ জিনিস খাওয়ার অভ্যাস করুন এতে করে রান্না ঘরে বেশি সময় থাকা লাগবে না।
  • রান্নাঘর সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
  • দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকের দেয়ালে জানালা থাকলে অবশ্যই পর্দা টেনে রাখুন।

শেষকথা

পরিবারের সকল সদস্যের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রান্নাঘরকে রাখতে হবে পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন। গ্রীষ্মকালে রান্নাঘরে প্রচণ্ড গরম থাকে, তখন রান্নাঘরে রান্না করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কিছু কৌশল অবলম্বন করে রান্নাঘরকে ঠান্ডা রাখা যায়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *