ন্যাপথলিন দিয়ে মশা তাড়ানোর ৫টি উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে বিভিন্নভাবে মশা দূর করা যায়। ন্যাফথলিন হচ্ছে তার মধ্যে একটি পদ্ধতি। খুবই সহজে ন্যাফথলিন দিয়ে ঘর থেকে মশা তাড়ানো যায়।

বাংলাদেশের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে মশার সমস্যা খুবই সাধারণ। গরমকাল, বর্ষা কিংবা শীতকাল প্রায় পুরো বছর জুড়েই মশার উৎপাত দেখা যায়। মশা শুধু বিরক্তই করে না, বরং ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো মারাত্মক রোগ ছড়ায়। তাই মানুষ যুগ যুগ ধরে মশা তাড়ানোর জন্য ঘরোয়া অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ন্যাফথলিন। ন্যাফথলিন কে অনেকে মথবল বা পোকা তাড়ানোর ওষুধ নামে চেনে। এটি সাধারণত কাপড়ের আলমারি, ট্রাঙ্ক বা বইয়ের তাককে পোকামাকড় মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। মশা তাড়ানোর ক্ষেত্রেও ন্যাফথলিন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আজকের ব্লগে থেকে জানুন কীভাবে ন্যাফথলিন ব্যবহার করে মশা তাড়ানো যায়, এর সুবিধা-অসুবিধা এবং বিকল্প উপায়গুলো।
ন্যাফথলিন একটি সাদা বা স্বচ্ছ বলের মতো রাসায়নিক পদার্থ, যা থেকে তীব্র গন্ধ বের হয়। সাধারণত এটিকে “মথবল” বলা হয়। কাপড়ের পোকা, তেলাপোকা বা অন্যান্য ছোট পোকা দূরে রাখতে এটি আলমারি, ট্রাঙ্ক, বা বইয়ের তাকের ভেতর রাখা হয়। এর গন্ধ বেশ তীব্র, আর সেই গন্ধেই মশাসহ অনেক কীটপতঙ্গ দূরে সরে যায়। এজন্য মানুষ এটি মশা তাড়াতেও ব্যবহার করে থাকে। তবে ব্যবহার করার সময় অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে, কারণ ন্যাফথলিন বিষাক্ত।
ন্যাপথলিন দিয়ে মশা তাড়ানোর উপায়
পানিতে ন্যাফথলিন
মশা সাধারণত স্থির পানিতে ডিম পাড়ে। যেমন – ফুলের টবের নিচে জমে থাকা পানি, ড্রেন, ডাস্টবিনের কোণে রাখা পানির পাত্র ইত্যাদি। এসব জায়গায় কয়েকটি ন্যাফথলিন ফেলে রাখুন দেখবেন মশা কাছাকাছি আসবে না।
ঘরের কোনায় রাখুন
ঘরের বিভিন্ন কর্নারে মশা লুকিয়ে থাকে। ঘরের বিভিন্ন কোণায় বা যেখানে মশার উপদ্রব বেশি, সেখানে ২-৩ টি ন্যাপথালিনের বল রেখে দিন। ন্যাপথালিনের তীব্র গন্ধের কারণে মশা সেই জায়গায় থাকবে না।

জানালার পাশে রাখুন
মশা সাধারণত জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরে ঢোকে। জানালার পাশে বা জানালার গ্রিলে কয়েকটি ন্যাফথলিন রেখে দিলে মশার প্রবেশ কমে যায়। এটি ন্যাফথলিন দিয়ে মশা তাড়ানোর অনেক সহজ একটি পদ্ধতি।

দরজার ফাঁকে রাখুন
দরজা খোলা বা ফাঁকা থাকলে সেখান দিয়ে মশা সহজে ঢুকতে পারে। দরজার পাশে বা মেঝেতে কয়েকটি ন্যাফথলিন রেখে দিলে মশা ন্যাপথালিনের গন্ধে ভেতরে আসতে পারবে না।
বিছানার নিচে রাখুন
রাতে ঘুমানোর সময় অনেকেই মশার কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমান, আবার মশারি ব্যবহার করেন না। এ ক্ষেত্রে বিছানার চারপাশে বা নিচে কয়েকটি ন্যাফথলিন রাখলে মশার সংখ্যা অনেকটা কমে যায়।
আরও পড়তে পারেন:
মশা তাড়ানোর ১২ টি ঘরোয়া উপায়
তেজপাতা দিয়ে মশা তাড়ানোর ৭টি উপায়
ন্যাফথলিন ব্যবহারের সুবিধা
- এটি সহজে পাওয়া যায়, বাজারে সস্তায় বিক্রি হয়।
- ব্যবহার করা সহজ। শুধু যেখানে দরকার সেখানে রেখে দিলেই হবে।
- এটি আলাদা করে ধূপ বা কয়েলের মতো জ্বালাতে হয় না। এটা ব্যবহার এর ফলে কাপড়ের পোকা, তেলাপোকা বা অন্যান্য পোকাও দূরে থাকে।
ন্যাফথলিন ব্যবহারে সতর্কতা
- কখনোই খাবারের কাছে ন্যাফথলিন রাখবেন না।
- শিশু বা পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে রাখুন।
- ঘরে খুব বেশি পরিমাণে ব্যবহার করবেন না, এতে গন্ধে অস্বস্তি হতে পারে।
- দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ঘরে রেখে দেবেন না। সময়মতো বদলাতে হবে।
শেষকথা
ন্যাফথলিন একটি সহজলভ্য রাসায়নিক পদার্থ, যা দিয়ে অল্প সময়ে মশা তাড়ানো সম্ভব। তবে ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, কারণ এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে শিশু বা পোষা প্রাণীর ঘরে ন্যাফথলিন রাখা ঠিক নয়। ন্যাফথলিন সাময়িকভাবে মশা তাড়াতে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে প্রাকৃতিক উপায় ও মশারি ব্যবহারই সবচেয়ে কার্যকর।